শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৬ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন ডেক্সঃ
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম পদত্যাগ করেছেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের মুখে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় নিজ কার্যালয়ে এই ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় পদত্যাগপত্রেও স্বাক্ষর দেন সাইফুল।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনসহ সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আনসারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামনে পদত্যাগপত্রটি দেন সাইফুল ইসলাম।
পরে কড়া নিরাপত্তায় হাসপাতাল ত্যাগ করেন পদত্যাগী পরিচালক।
ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, বরিশালের সন্তান আমি। বরিশালের প্রতি এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার আবেগ আছে, ভালোবাসা আছে। তবে পরিচালকের পদে এখন থেকে আমি আর থাকবো না।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনরতরা প্রথমে হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এরপর পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করেন বিপুল সংখ্যক ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি বিভাগীয় কমিশনার, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতনরা বৈঠকে বসেন।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, ৫ আগস্টের আগে ৩ আগস্ট পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও তার অনুসারীরা স্বৈরাচারের পক্ষে সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন। এছাড়া পরিচালকের নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের কথা তুলে ধরেন তারা। মেডিকেলের সব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, টাকা লুটপাট করা, সৎ যোগ্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানিসহ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন আন্দোলনরতরা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, বিগত সময়ের কর্মকাণ্ডের জন্য আগেই তার পদত্যাগ দাবি করা উচিত ছিল। হাসপাতালের প্রত্যেক ক্ষেত্রেই অনিয়ম ও দুর্নীতি করে মেডিকেলের চিকিৎসা ব্যবস্থা বাণিজ্যমুখী করেছেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে হাসপাতালে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) চিকিৎসকদের ওপর রোগীর স্বজনদের হামলার প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি চলছে। ফলে রোগীদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
যদিও জরুরি বিভাগ ও জরুরি সেবা তাদের কর্মসূচির বাইরে রাখা হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালের পরিচালক পদে সাধারণত দুই বছর করে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন নিযুক্ত পরিচালকরা।
কিন্তু পরিচালক সাইফুল ইসলাম তিন বছর ধরে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
পদে থাকাকালে বিগত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পদস্থদের সঙ্গে আঁতাত করে তার নানান অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এমনকি স্বৈরাচার সরকার পতনের পর পরিচালক সাইফুল ইসলাম বিভিন্নভাবে আঁতাত করে ও বিতর্কিত অনেক নেতাকে উপঢৌকন দিয়ে এতদিন বহাল তবিয়তে ছিলেন বলে অভিযোগ মিলেছে।